
ন্যায্য বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনে পরিবহণ শ্রমিকরা
রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটে বাস বন্ধ, চরম ভোগান্তিতে যাত্রীরা


রাজশাহী প্রতিনিধি
ন্যায্য বেতন বৃদ্ধির দাবিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী থেকে ঢাকাসহ বিভিন্ন রুটের দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। গতকাল সোমবার সকাল থেকে এ কর্মসূচি পালন করছেন চালক, হেলপার ও সুপারভাইজাররা। ফলে হঠাৎ করেই যাত্রীরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে পড়ে। শ্রমিকরা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই তাদের বেতন বাড়ানো হয়নি। চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী একটি ট্রিপে ১৫ বছর আগেই চালকের জন্য নির্ধারিত হয়েছিল ১ হাজার ৩৫০ টাকা, সুপারভাইজারের জন্য ৫৭০ টাকা এবং হেলপারের জন্য ৫৩০ টাকা। এতদিন পরও সেই হার বহাল রয়েছে। রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী বাসেও চালক পান মাত্র ১ হাজার ২০০ টাকা, হেলপার ৬০০ টাকা এবং সুপারভাইজার আরও কম। এত সামান্য আয় দিয়ে সংসার চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ শ্রমিকদের। তাদের মূল দাবি হলো, প্রতিটি ট্রিপে চালকের বেতন ২ হাজার টাকা, সুপারভাইজারের ১ হাজার ১০০ টাকা এবং হেলপারের ১ হাজার টাকা করতে হবে। পাশাপাশি হোটেল ভাড়া বাবদ ২০০ টাকা এবং প্রতিবার খাবারের জন্য জনপ্রতি ১০০ টাকা দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। এছাড়া প্রতি বছর বোনাস দেওয়ার দাবিও তুলেছেন শ্রমিকরা। শ্রমিকদের অভিযোগ, মালিকদের সঙ্গে বারবার বৈঠক হলেও বাস্তব কোনো সমাধান হয়নি। গত ২৩ আগস্ট বাস চলাচল বন্ধ করে আন্দোলন করলে মালিকরা বেতন বাড়ানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন, কিন্তু এখনো তা কার্যকর হয়নি। এ কারণে তারা আবারও কর্মবিরতির পথ বেছে নিয়েছেন। এদিকে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। অনেক যাত্রী টিকিট কেটে বাসস্ট্যান্ডে এসে জানতে পারেন বাস চলছে না। হঠাৎ ট্রেনের টিকিটও পাওয়া সম্ভব হয়নি। যে কয়েকটি কোম্পানির বাস চলাচল করছে, সেগুলোর টিকিটেরও ব্যাপক সংকট দেখা দিয়েছে। রাজশাহী জেলা মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পাখি বলেন, একতার বাসে চালক পান ১ হাজার ৭৫০ টাকা, কিন্তু অন্য কোম্পানিগুলোতে এখনো ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ২৫০ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ। মালিকরা বারবার আশ্বাস দিলেও শ্রমিকদের দাবি পূরণ হচ্ছে না। তাই আন্দোলন ছাড়া আর কোনো উপায় থাকছে না। অন্যদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ট্রাক, ট্যাংক লরি ও কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সাইদুর রহমান জানান, ২১ সেপ্টেম্বর মালিক-শ্রমিক বৈঠকের কথা থাকলেও মালিকপক্ষ হঠাৎ তারিখ পরিবর্তন করায় হতাশ হয়ে শ্রমিকরা ধর্মঘটে নেমেছেন। বাস মালিকরা জানিয়েছেন, শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে আলোচনা চলছে। দ্রুতই সিদ্ধান্ত জানানো হবে। প্রতিবেদন লেখা অবস্থায় বাস চলাচল বন্ধ থাকে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ